দেবীদ্বার (কুমিল্লা), ০৬ এপ্রিল ২০২৩ইং ২০২৩ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): কুমিল্লা দেবীদ্বারে বাহরাইন প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে আরেক বাহরাইন প্রবাসী যুবকের পরকীয়ার অভিযোগে দুজনকে ৯ ঘণ্টা গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন- এলাহাবাদ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. আবুল হাসেম সরকার, মো. রমিজ উদ্দীন, সাদেকুর রহমান।
এরআগে মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাবরী মিয়ার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। পরকীয়ায় অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাহরাইন প্রবাসী মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী রোকসানা বেগম এবং একই উপজেলার গৌরসার গ্রামের বাহরাইন প্রবাসী নুরুল হক।
পরে তাদেরকে নিয়ে সালিশ করে স্থানীরা। সালিশে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই ওই গৃহবধূকে এক কাপড়ে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় সালিশদাররা।
বুধবার (৫ এপ্রিল) ভুক্তভোগী প্রবাসী নুরুল হক বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ্ করে ১১ জনের নামে মামলা করেছেন।
দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর জানায়, অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে নারী-পুরুষকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন এবং তাদের আটকে রেখে সালিশ করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিই হয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনীকে না জানিয়ে। আইন হাতে নেওয়ার প্রবণতা রোধে আমরা জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কোর্ট হাজতে পাঠিয়েছি। ভুক্তভোগী প্রবাসী নুরুল হক বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
উল্লেখ্য, প্রায় ২-৩ বছর ধরে উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাহরাইন প্রবাসী মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী রোকসানা বেগমের সঙ্গে একই উপজেলার গৌরসার গ্রামের বাহরাইন প্রবাসী নূরুল হকের পরকীয়া চলছিল। মঙ্গলবার ভোররাত ৩টার দিকে রোকসানা নুরুল হককে মোবাইল ফোনে ডেকে তার ঘরে আনেন। নুরুল হক বাড়ি থেকে বের হলে তার বড় ভাই মো. এনামুল হক তাকে অনুসরণ করে ওই বাড়িতে আসেন এবং রোকসানার দাদা শ্বশুর বাবরী মিয়াকে ডেকে এনে দুজনকে ঘরে তালাবন্দি করেন।
পরে বাড়ির লোকজন এসে পরকীয়ায় আটক দুজনকে প্রায় ৯ ঘণ্টা গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালায়।
ঘটনার পর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সালিশ করে। সালিশে রোকসানার প্রবাসী স্বামী বাড়ি ফিরলে তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং রোকসানাকে এক কাপড়ে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নুরুল ইসলামকে তার ভাই ও স্বজনদের জিম্বায় দেওয়া হয়।
Leave a Reply